আফগান ক্রিকেটাররা গ্রিল করা আস্ত ভেড়া সাবাড় করে দেন অবলীলায়
সহজ-সরল আর ভালো মানুষ। ক্রিকেট দুনিয়ার জটিলতা তাঁদের এখনো স্পর্শ করে উঠতে পারেনি। খেলাটায় তাঁরা মাঠে নামেন মনের আনন্দে। সর্বোচ্চটা দিয়েই চেষ্টা করেন। জিতলে তো ভালোই, হারলেও কোনো অসুবিধা নেই। ফিটনেস ট্রেনিং তারা করেন ঠিকই। কিন্তু ভোজন রসিক আফগান ক্রিকেটাররা নাকি জিম-টিম শেষ করেই গ্রিল করা আস্ত ভেড়া সাবাড় করে দেন অবলীলায়!
আফগান ক্রিকেটারদের একেবারে অন্দরের কথা বেশ মজা করেই বলেছেন ইনজামাম-উল হক। পাকিস্তানি এই সাবেক ক্রিকেট তারকা ছিলেন আফগানিস্তান কোচের দায়িত্বে। সাফল্যমাখা সাতটি মাস কাটিয়ে ইনজামাম এখন নিজের দেশেরই বিরাট দায়িত্ব সামলাচ্ছেন—প্রধান নির্বাচকের। এই সাত মাস তাঁর জন্য অসম্ভব আনন্দের সময় ছিল বলেই জানিয়েছেন পাকিস্তানের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান।
আফগান ক্রিকেটারদের একেবারে অন্দরের কথা বেশ মজা করেই বলেছেন ইনজামাম-উল হক। পাকিস্তানি এই সাবেক ক্রিকেট তারকা ছিলেন আফগানিস্তান কোচের দায়িত্বে। সাফল্যমাখা সাতটি মাস কাটিয়ে ইনজামাম এখন নিজের দেশেরই বিরাট দায়িত্ব সামলাচ্ছেন—প্রধান নির্বাচকের। এই সাত মাস তাঁর জন্য অসম্ভব আনন্দের সময় ছিল বলেই জানিয়েছেন পাকিস্তানের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান।
ইনজামামের অধীনে স্বপ্নিল এক সময় কাটিয়েছে আফগানরা। এই সময় ১৭টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে ১২টিতেই তুলে নিয়েছে জয়—এর মধ্যে একটি জয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। ১০টি ওয়ানডে খেলে জয় ৬টিতে—প্রতিটি জয়ই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে, জিম্বাবুয়ে ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাটিতে। দুই জায়গাতেই সিরিজ জয়ের স্বাদ।
ইনজামাম নিজেও এত কিছু ভাবেননি দায়িত্ব নেওয়ার আগে। কিন্তু বাড়িতে ছোট ছোট বাচ্চা রেখে দীর্ঘদিন বিদেশের মাটিতে কাটানো তাঁর পক্ষে সম্ভব নয় বলেই দায়িত্বটা দীর্ঘ সময়ের জন্য কাঁধে তোলেননি তিনি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর পাকিস্তান ক্রিকেটের প্রধান নির্বাচকের দায়িত্ব পাওয়ার ব্যাপারটিরও আছে একটা বড় ভূমিকা।
আফগানিস্তান ক্রিকেটকে খুব কাছ থেকে কেমন দেখলেন ইনজামাম? ক্রিকইনফোর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘কোচ হওয়ার পর আমার হাতে খুব বেশি সময় ছিল না। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ ছাড়াও এশিয়া কাপের বাছাইপর্ব ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ছিল। আমি দলের খেলোয়াড়দের মৌলিক বিষয়ে খুব একটা মনোযোগ দিতে পারিনি। তবে কিছু জিনিস পরিবর্তন করার চেষ্টা করেছি। ওদের মধ্যে জয়ের ক্ষুধাটা এনে দিতে চেয়েছি। দেখেছি, ওদের খুব ভালো ব্যাটসম্যানও ৩০-৩৫ রান করেই সন্তুষ্ট থাকে। আমি ওদের বলেছি, এই মানসিকতা বদলাতে হবে। ৩০-৩৫ রান করে আউট হয়ে যাওয়াটা যে অপরাধের পর্যায়ে পড়ে, সেটাই ওদের বুঝিয়েছি।’
আফগানিস্তান ক্রিকেটের উন্নতির সবচেয়ে বড় বাধা দেশটিকে ঘিরে ভূ-রাজনৈতিক সমস্যা। ইনজামাম মনে করেন, নিজ দেশে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আয়োজন না করতে পারলে আফগানিস্তানের পক্ষে উন্নতির গ্রাফটা ধরে রাখা মুশকিল, ‘দেখুন, যে সমস্যাটা পাকিস্তানের হয়েছে, সেটাই আরও বাজেভাবে হওয়ার শঙ্কা আফগানিস্তানের বেলায়। ঘরের মাঠে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট না হওয়ার কারণে পাকিস্তান ক্রিকেটের ক্রমাবনতি হয়েছে। মান নিচে নেমে গেছে। পাকিস্তান একটি প্রতিষ্ঠিত শক্তি। তাদেরই যদি এমন হয়, তাহলে আফগানিস্তানের ক্ষতির শঙ্কাটা আরও বেশি।’
আফগানিস্তান ক্রিকেটের সাফল্য ধরে রাখতে আইসিসির ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করেন তিনি ,‘আইসিসিকে এগিয়ে আসতে হবে। বিশেষ করে আফগানিস্তানের মতো দেশগুলোকে তারা যদি কোচ দিয়ে সহায়তা করে তাহলে খুব ভালো হয়।’
আফগানিস্তানে ক্রিকেটাররা আকাশচুম্বী তারকাখ্যাতিই উপভোগ করেন। ক্রিকেটে দেশটির একেকটি বিজয় গোটা আফগানিস্তানেই নাকি আনন্দের বন্যা বইয়ে দেয়। ইনজামাম অবাক হয়ে দেখেছেন ক্রীড়াবিদদের প্রতি আফগানিস্তানের মানুষের শ্রদ্ধাবোধ। একই সঙ্গে ভীতির সঙ্গে দেখেছেন, ক্রিকেট দলের জয়ে কী বন্য উল্লাসেই না মেতে ওঠে তারা, ‘জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জয়ের পর নওরোজ মঙ্গলকে টেলিভিশনে রীতিমতো ভাষণ দিতে হলো। তার ভাষণের মূল বিষয় ছিল এই জয়ের আনন্দে কেউ যেন উচ্ছৃঙ্খল না হয়ে পড়ে। কারণ তার কিছুদিন আগেই এমন উৎসব-উদযাপনে ফাঁকা গুলিতে নিহত হয়েছিল ৫ ক্রিকেট-প্রেমী।’
Post a Comment