Header Ads

নেইমার জাদুতে ব্রাজিলের বড় জয়ের দিনে জয় বঞ্চিত আর্জেন্টিনা


নাতালের দাস দুনাস স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় শুক্রবার ভোরে ম্যাচের শুরুতেই দলকে এগিয়ে নেওয়ার পর ফিলিপে লুইস আর গাব্রিয়েল জেসুসের গোল বানিয়ে দেন নেইমার। প্রথমার্ধেই করা চারটি গোলের আরেকটি ফিলিপে কৌতিনিয়োর। দ্বিতীয়ার্ধে স্কোরশিটে নাম লেখান রবের্তো ফিরমিনো।।
সপ্তম মিনিটে ম্যাচের প্রথম ভালো সুযোগটি কাজে লাগাতে পারেনি ব্রাজিল। কৌতিনিয়োর বাড়ানো বল থেকে ডি-বক্সে গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে নেওয়া জেসুসের শট ক্রসবারের উপর দিয়ে যায়।
গোলের জন্য অবশ্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। একাদশ মিনিটে শুরুটা করেন নেইমারই। ডিফেন্ডার রোনাল্দ রালদেসের পা থেকে বল কেড়ে বাড়ান জেসুসকে। বলটা ফেরত পেয়ে ডি-বক্সে পৌঁছে যাওয়া নেইমারকে ফাঁকা জালে কেবল তা পাঠাতে হয়।
ব্রাজিলের হয়ে ৪৯ গোল হলো নেইমারের। ‘সাদা পেলে’ হিসেবে পরিচিত জিকোকে ছাড়িয়ে এখন এককভাবে ব্রাজিলের চতুর্থ সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়ে গেলেন তিনি। সামনে এখন রোমারিও, রোনালদো আর পেলে।
স্বাগতিকদের ব্যবধান দ্বিগুণ হতে সময় লাগে ১৫ মিনিট। দারুণ দক্ষতায় ডিফেন্ডারদের এড়িয়ে ডান দিক থেকে জুলিয়ানো পাস দিয়েছিলেন ডি-বক্সে। প্রথম ছোঁয়াতেই বল জালে পাঠান লিভারপুলের অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার কৌতিনিয়ো।
৩৯তম মিনিটে লুইসের গোলটিতে বড় অবদান নেইমারের। মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে প্রতিপক্ষের বাধায় পড়ে যাওয়ার আগেই নিখুঁতভাবে তিনি বল বাড়িয়েছিলেন ডি-বক্সে। সামনে থাকা গোলরক্ষককে ফাঁকি দিতে সমস্যা হয়নি আতলেতিকো মাদ্রিদের ডিফেন্ডার লুইসের।
প্রথমার্ধের শেষ দিকে আবারও নেইমার জাদু্। তার নিখুঁতভাবে বাড়ানো বল এবার গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে জালে পাঠাতে কোনো ভুল করেননি ১৯ বছর বয়সী জেসুস।
আগামী জানুয়ারিতে ম্যানচেস্টার সিটিতে যোগ দিতে যাওয়া জেসুস জাতীয় দলের হয়ে তিন ম্যাচে পেলেন ৩ গোল।
দ্বিতীয়ার্ধে দাপটের সঙ্গে খেললেও গোল পায়নি স্বাগতিকরা। ৫৪তম মিনিটে ডি-বক্সে ঠিক বাইরে থেকে নেওয়া নেইমারের জোরালো শট ঠেকান গোলরক্ষক লামপে।
পাঁচ মিনিট পর নেইমারের দুর্দান্ত ক্রসে জেসুসের হেড কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান গোলরক্ষক।
এরপর বেশিক্ষণ মাঠে থাকতে পারেননি নেইমার। প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড়ের কনুইয়ের আঘাতে ডান চোখের পাশে কেটে গিয়ে পুরো মুখ রক্তে ভেসে যায় তার। ৬৯তম মিনিটে দলের সবচেয়ে দামি এই খেলোয়াড়কে তুলে নিয়ে উইলিয়ানকে নামান কোচ তিতে।
নেইমার উঠে গেলেও অবশ্য গোল পেতে সমস্যা হয়নি তিতের অধীনে দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়ানো ব্রাজিলের। ৭৫তম মিনিটে কৌতিনিয়োর কর্নারে কাছ থেকে হেডে বল জালে পাঠান জেসুসের বদলি হিসেবে একটু আগেই মাঠে নামা লিভারপুলের ফিরমিনো।
দুর্দান্ত এই জয়ের পর দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইপর্বে ৯ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে ব্রাজিল।
আগের ম্যাচে ভেনেজুয়েলাকে ৩-০ গোলে হারানো উরুগুয়ে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে।
নবম রাউন্ডের প্রথম ম্যাচে একুয়েডর ৩-০ গোলে হারিয়েছে চিলিকে। কলম্বিয়া একমাত্র গোলে হারিয়েছে প্যারাগুয়েকে।
দক্ষিণ আমেরিকা থেকে চারটি দল সরাসরি ২০১৮ সালের রাশিয়া বিশ্বকাপে খেলবে। পঞ্চম দলটির বিশ্বকাপে সুযোগ পেতে ওশিয়ানিয়া অঞ্চলের সেরা দলের সঙ্গে প্লে-অফ খেলতে হবে।অপর ম্যাচে লিওনেল মেসিকে ছাড়া খেলতে নামা আর্জেন্টিনা ২-২ গোলের এই ড্রয়ে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইপর্বে পিছিয়ে পড়লো।
কুচকির চোটে পড়া মেসি না থাকলেও আক্রমণভাগে তারকার অভাব ছিল না এদগার্দো বাউসার দলে। তবে পেরুর রাজধানী লিমার জাতীয় স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় শুক্রবার সকালে শুরু হওয়া এই ম্যাচে গোছানো আক্রমণে যেতে সময় লাগে আর্জেন্টিনার। অন্য দিকে নিজেদের মাঠে আক্রমণাত্মক শুরু করে পেরু।
দশম মিনিটে কর্নার থেকে পেরুর রেনাতো তাপিয়ার হেড দূরের পোস্ট দিয়ে বেরিয়ে যায়। একটু পর আর্জেন্টিনার সের্হিও আগুয়েরোর বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া ফ্রি-কিক ঝাঁপিয়ে পড়ে ফেরান গোলরক্ষক।
গনসালো হিগুয়াইন-আগুয়েরো বা পাওলো দিবালা-আনহেল দি মারিয়া নয়, ষোড়শ মিনিটে রামিরো ফুনেস মোরির গোলে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। কর্নার থেকে আগুয়েরোর পা হয়ে ডি-বক্সে জটলার মধ্যে বল পেয়ে দেশের হয়ে প্রথম গোল করেন ২৫ বছর বয়সী এভারটনের এই ডিফেন্ডার।
ডান দিক থেকে আক্রমণে যাওয়া দিবালার বাড়ানো বল বক্সের মধ্যে নিয়ন্ত্রণে নিতে না পারলেও কর্নারটি আদায় করে নিয়েছিলেন আগুয়েরো।
৩৩তম মিনিটে দি মারিয়ার ফ্রি-কিক কর্নারের বিনিময়ে ফিরিয়ে ব্যবধান বাড়াতে দেননি গোলরক্ষক।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে একের পর এক আক্রমণে কোণঠাসা হয়ে পড়ে আর্জেন্টিনা। পাঁচ মিনিটের মধ্যেই সমতা প্রায় ফিরিয়ে এনেছিল পেরু। ফ্লোরেসের জোরালো শট ঠেকিয়ে সে যাত্রা আর্জেন্টিনাকে বাঁচান ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ডিফেন্ডার মার্কোস রোহো।
তবে পেরুকে ঠেকিয়ে রাখা যায়নি। মিগেল আনহেল ট্রাউকোর লম্বা করে বাড়ানো বল বুক দিয়ে নামিয়ে ফুনেস মোরির বাধা এড়িয়ে নিখুঁতভাবে জালে পাঠিয়ে দেন অধিনায়ক পাওলো গেররেরো গনসালেস।
৭০তম মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার দারুণ একটা সুযোগ নষ্ট হয় স্বাগতিকদের। ট্রাউকোর দুর্দান্ত পাসে রুইদিয়াসের শট ডান পোস্টের একটু বাইরে দিয়ে যায়।
খেলার ধারার বিপরীতেই আবার এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। ৭৭তম মিনিটে পাবলো সাবালেতার বাড়ানো বল এগিয়ে আসা গোলরক্ষকের উপর দিয়ে জালে পাঠিয়ে দেন ইউভেন্তুসের স্ট্রাইকার হিগুয়াইন।
৮৪তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে সমতা ফেরায় পেরু। ডান দিকে ঝাঁপিয়েও ক্রিস্তিয়ান কুয়েভার জোরালো শট ঠেকাতে পারেনি গোলরক্ষক সের্হিও রোমেরো।
ডি-বক্সে গেররেরোকে মোরি ফেলে দেওয়ায় স্পটকিকের নির্দেশ দিয়েছিলেন রেফারি।
এই ড্রয়ে রাশিয়া বিশ্বকাপের দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইপর্বে ৯ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম স্থানে চলে গেল আর্জেন্টিনা।
নবম রাউন্ডের প্রথম ম্যাচে চিলিকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দেওয়া একুয়েডর ১৬ পয়েন্ট নিয়েও গোল পার্থক্যে এগিয়ে আছে তৃতীয় স্থানে। আর্জেন্টিনার সঙ্গে পয়েন্ট ও গোল পার্থক্য সমান হলেও বেশি গোল করার সুবাদে চতুর্থ স্থানে আছে শেষ মুহূর্তের গোলে প্যারাগুয়েকে হারানো কলম্বিয়া।
আগের ম্যাচে নেইমারের নৈপুণ্যে পেরুকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দেওয়া ব্রাজিল ১৮ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছ। ভেনেজুয়েলাকে ৩-০ গোলে হারানো উরুগুয়ে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে নবম রাউন্ড শেষে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে।
দক্ষিণ আমেরিকা থেকে চারটি দল সরাসরি ২০১৮ সালের রাশিয়া বিশ্বকাপে খেলবে। পঞ্চম দলটির বিশ্বকাপে সুযোগ পেতে ওশিয়ানিয়া অঞ্চলের সেরা দলের সঙ্গে প্লে-অফ খেলতে হবে

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.